April 27, 2024, 6:24 am
পাইকগাছা পৌরসভার ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে শিবসার পানি। দীর্ঘ দিন ধরে শিবসা নদীর ট্রলার ঘাট থেকে শুর” করে আশপাশের এলাকায় অবাধে ফেলা পৌর বর্জ্য’র পঁচা দূর্গন্ধে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি টিকে থাকাই দায় হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ হাটুরিয়াদের। এমন পরিস্থিতিতে বর্জ্য স্তুপ সংলগ্ন কাঁচাবাজার, মুদি, মাছ, মাংস, চা-পট্টি, হোটেল, চাল ও পান বাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণ জর”রী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পৌর ব্যবসায়ীদের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত শিবসার ট্রলার ঘাট। ঘাটটি দিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন খুলনা থেকে নৌ-পথে আনা মালামাল ওঠানামা করেন। পাশেই রয়েছে কাঁচা বাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর বাজার ও চা-পট্টি। অথচ প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিনিয়ত অবাধে সেখানে ফেলা হচ্ছে ট্রাক ভর্তি করে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ডাস্টবিনের বর্জ্য। আর সেখানকার বর্জ্য পঁচা দূর্গন্ধে শিবসার পানি দূষণসহ ভারী করে তুলছে আশপাশের পরিবেশ। প্রতি মূহুর্তে সেখানে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছি। ঘাট শ্রমিক নুর ইসলাম বলেন, ‘এ ঘাট দিয়ে তারা নিয়মিত পৌর ব্যবসায়ীদের মালামাল ওঠা-নামা করে থাকেন। অথচ পৌর সভার ফেলা বর্জ্যরে পঁচা দূর্গন্ধে চরম কষ্ঠ হয় তাদের। কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিষেধ করলেও তারা অবিরাম শিবসার পানিতে বর্জ্য ফেলে যাচ্ছে।
কাঁচাবাজার কমিটির সভাপতি কামর”ল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌর বাজারের পাশে শিবসার পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে পৌর ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। অথচ এর একবারেই কোল ঘেঁষে রয়েছে কাঁচাবাজার, মুদি, মাছ, মাংস বাজার, চা পট্টি, হোটেল, চালের বাজার, পানবাজারসহ নানা সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডসহ বাজারের ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে ঘাটসংলগ্ন স্থানে ফেলে সেখানকার বাজারসহ আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করছে প্রতিনিয়ত। গবাদি পশু-পাখি, মানুষের মলমূত্রসহ বিভিন্ন পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ও বাজারের বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত ডাস্টবিনের ময়ল-আবর্জনা ভর্তি ভ্যান ও ট্রাক যোগে নিয়ে ফেলায় গোটা এলাকা পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে। এনিয়ে পৌরপিতা মেয়রের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন ফায়দা হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। স্থানীয় মুদিব্যবসায়ী পীযূষ সাধু বলেন, জেলাসদর খুলনা থেকে নৌ-পথে আণা পণ্যসমূহ বাধ্য হয়ে প্রথমে আবর্জনা স্তুপের উপর আনলোড করে যার যার প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ময়লা ফেলার কোন নির্দিষ্ট স্থান গড়ে তুলতে না পারায় এমন অবস্থার জন্য দায়ী বলেও দাবি তার।
মাংস ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ব্যবসার স্বার্থে তারা দূর্গন্ধ সহ্য করলেও তাদের কাছে আসা ক্রেতা সাধারণকে বাধ্যতামূলক মুখে কাপড় গুঁজে আসতে হয়। এতে রীতিমত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রযেছেন তারা।
চা দোকানী স্বপন ও কেসমত বলেন, প্রথমত তাদের পট্টি কাঁচা বাজারের ভেতর থাকলেও সেখানে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপনের ফলে শিবসা পাড়ে তাদের পুণর্বাসন করা হয়েছে। তবে সেখানকার সার্বক্ষণিক দূর্গন্ধে রীতিমত টিকে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এব্যাপারে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বর্জ্য বহনকারী ট্রাকচালক বলেন, তারা কর্মচারী মাত্র। কর্তৃপক্ষ তাদের যেখানে ফেলতে বলেছে, সেখানেই ফেলছেন। পৌর প্যানেল মেয়র শেখ মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনের জন্য পৌরসদরের বাইরে ১২ বিঘা জমি নেয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই স্টেশনটির বাস্তবায়ন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, কোনোভাবেই নদীতে কিংবা জনগণের ক্ষতি হোক, এমন স্থানে বর্জ্য ফেলা যাবে না। এব্যাপারে পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।
Comments are closed.