April 27, 2024, 5:55 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ৫২ কিমি: জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ৫২ কিমি: জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

ভারতীয় স্থলভাগে থাকা সুস্পষ্ট লঘুচাপ আরও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃহস্পতিবারও (১১ আগষ্ট) বায়ুচাপের পার্থক্য বিরাজ করছে। এজন্য সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপ ও বায়ুুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলজুড়ে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো)’র ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। সাতক্ষীরার উপকলীয় এলাকা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে উপকূলীয় এলাকার শতাধিক কিলোমিটার পাউবো’র বেড়িবাঁধ। শুস্ক মৌসুমে যখন বেড়িবাঁধ মেরামত করার সুযোগ থাকে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মেরামত করে না। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অনেক স্থানেই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কোথাও কোথাও ঠিকাদাররা দায়সারাভাবে বাঁধের মেরামত কাজ শেষ করে। ফলে দুর্যোগে সহজেই ঔসব বাঁধ ভেঙ্গে যায়। পাউবো’র তথ্যানুযায়ী জেলার মোট ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। তারমধ্যে বর্তমানে ৮২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতায় খুলনা জেলার কয়রা এলাকায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ষাটের দশকে মাটি দিয়ে তৈরি ওই বেড়িবাঁধ ছিল ১৪ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া ও প্রায় ৬০ ফুট তলা। কিন্তু এখন ওই ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উচ্চতা ও চওড়ার অর্ধেকও অবশিষ্ট নেই। অর্থাভাবে দীর্ঘদিনেও প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার করতে না পারায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ষাটের দশকে তৈরি ওই বেড়িবাঁধের বেশিরভাগই দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা হারিয়েছে। ফলে বাঁধগুলো ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং নিম্নচাপ, লঘুচাপ, আমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে লোকালয়ে পানি ঢোকা ঠেকাতে পারছে না। ফলে উপকূলীয় শ্যামনগর ও আশাশুনির কয়েক লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, লবণাক্ত মাটি দিয়ে উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো তৈরি। উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ নদীর পানিও লবণাক্ত। লবণাক্ত পানি বেড়িবাঁধের মাটির বন্ডিং দুর্বল করে ফেলে। অতিরিক্ত জোয়ারের পানির চাপে বাঁধের মাটি ধুয়ে যায়। তাছাড়া বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে চিংড়ি ঘেরে লবণপানি তোলার কারণেও বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে। তাছাড়া উপকূলীয় নদীগুলোতে পলি পড়ে নাব্যতা কমে গেছে। ফলে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়েছে। তাছাড়া প্রতিবছর গড়ে প্রায় দু’বার ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানছে। তখন জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া ওই বাঁধ দীর্ঘদিনেও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে যে বেড়িবাঁধ রয়েছে তা দিয়ে উপকূলীয় জনপদ রক্ষা করা সম্ভব নয়। সেজন্য নতুন করে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, তার বিভাগের অধীনে ৩৮০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বাঁধের ৪২ কিলোমিটার। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি, দাতনেখালী, দেবহাটার ভাতশালা ও হাড়দ্দহা ইত্যাদি। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধ মেরামত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন, তার বিভাগের অধীনে প্রায় ৪০০ কিলোমটিার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাধেঁর মধ্যে সাতক্ষীরার মধ্যে রয়েছে মাত্র ১০ কিলোমিটার। বাকি ৩০ কিলোমিটার খুলনার কয়রার মধ্যে। সাতক্ষীরায় তার এলাকার মধ্যে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, শ্রীউলা ও আশাশুনি সদরের কিছু অংশ এবং শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ইউনিয়নে বেশ কিছু বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সাগরের নিম্মচাপের প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাঁধের উপর আমাদের নজরদরী রয়েছে। আমি নিজে শুক্রবার ৭/২ পোল্ডার এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শনে যাবো। এছাড়া পাউবো’র পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাঁধ মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com