April 27, 2024, 8:59 am
বাংলার রুপ দুই বাংলার অহংকার বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা আমাদের সুন্দরবন বাহারি গাছপালা, বন্যপশু-পাখি ও জীবজন্তু ঘেরা গা ছমছমে পরিবেশে পরিপূর্ণ বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ এই বনভূমি। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সুন্দার সুন্দরী গাছের মাত্র ম্যানগ্রোভের জঙ্গল নয়, এটি ওয়াল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ও স্বীকৃত, দুই বাংলার মানুষ এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের উপর নির্ভরশীল ও বটে, সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য এক বিরাট আয়ের উৎস। এ বনের আশপাশ ঘিরে ৪৫০ টির মতো নদী, খাল যেখান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি সাদা মাছ, কাঁকড়া আহরণ করে হাজার হাজার জেলে বাওয়ালীর পরিবার জীবন-জীবিকা করে আসছে। এছাড়াও বনের হাজার হাজার মন শুকনা কাঠ, পাতা সংগ্রহ করে জ্বলানি হিসেবে ব্যবহার করছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা সুন্দরবনের গোলপাতা আর ও একটি আয়ের উৎস। সুন্দরবন একদিকে যেমন ব্যাক্তি কেন্দ্রিক আয়ের উৎস অন্যদিকে সরকারি রাজস্ব আয়েরও উৎস। তাছাড়া সুন্দরবনের মধুর সুনাম খ্যাতি বিশ্ব জোড়া, প্রতিবছর এ বন থেকে ১৫-১৬ হাজার মণ মধু সংগ্রহ হয়, যাহা সারাদেশ থেকে সংগ্রহীত মধুর অর্ধেকের ও বেশি, এক তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১০ হাজার মানুষ মধু সংগ্রহের কাজে সুন্দরবন নিয়োজিত থাকে। এ বন দুঃস্থ অসহায় দারিদ্র্য মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছে তার বুকে ধারণ করা প্রায় ৩৩৪ প্রজাতির বনজবৃক্ষ, বিভিন্ন প্রজাতির গুল লতার মাধ্যমে সৃষ্টি ভৈষজ ওষধের মাধ্যমে বর্তমানে দেশ-বিদেশে আধুনিক বিশ্বের মানুষের কাছে ঔষধ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, এর গ্রহণ যোগ্যতা ও চাহিদা বেড়েই চলেছে।
চির সবুজের এই সুন্দরবন সৌন্দর্য, রুপ মাধুর্যে যেন অনন্ত যৌবনা এত সৌন্দর্য মন্ডিত সুন্দরবন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ তথা বিনোদন পিপাসুদের অতীত থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, সে ডাকে সাড়া দিয়ে স্ন্দুরবন সম্পর্কে জানতে চিনতে এর অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশি বিদেশি পর্যটক আসছে অনুকূল পরিবেশ পেলে পর্যটক খাতসহ অন্যান্য খাত থেকে বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারি রাজস্ব আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে, সব মিলিয়ে সুন্দরবনের গুরুত্ব প্রয়োজন অবদান বলে শেষ করা অসম্ভব। মানুষের বেঁচে থাকার এক অনন্য মৌলিক উপাদান অক্সিজেন যা ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে সু বিস্তৃত বিশাল বনবৃক্ষ অক্সিজেন দিচ্ছে।
এ দিক দিয়ে এ বনের গুরুত্ব অবদান অপরিসীম, সুন্দরবন বাংলাদেশের রক্ষাকবচ ও বটে ঝড় তুফান জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দূর্যোগের মতো বিরুপ প্রভাবের হাত থেকে রক্ষা করতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরবন প্রতি নিয়ত প্রকৃতির বিরুদ্ধে নীরবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সারা বিশ্ব জুড়ে আমাদের এই সুন্দরবনের সুনাম রয়েছে, প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ বিশেষ করে আমাদের দেশের সকলের উচিত বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন আরও জোরদার ও কঠোর করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজনে সকলকে এর মূল্য বোঝানো যে এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তাহলেই নির্বিচারে বন উজাড় ও পশু- পাখি মরার হাত হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভাব।
Comments are closed.