April 27, 2024, 10:13 am
কপিলমুনি থেকে কমে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার পাখি। এক সময় পাখির সুমধুর ডাকে গ্রামবাংলার মানুষের ঘুম ভাংলেও গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে আগের মত আর পাখির ডাক এখন আর শোনা যায় না। কালের আবর্তে গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে পাখি। তথ্যানুসন্ধ্যানে জানাযায়, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে পাখির আবাসস্থল ধ্বংস ও ফসলের ক্ষেতে প্রয়োগ করা কীটনাশকের প্রভাবে এসব পাখি আজ বিলুপ্ত প্রায়। বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, ঘুঘু, বাওয়াই, শালিক, টুনটুনি, কাঠটোকরা, ফ্যাসকো কোকিল, ডাহুক, বাবুই, মাছরাঙা, বটর, টেইটেরা, গোমড়া, প্যাঁচাসহ আরো অনেক পাখিকে আর দেখা যায় না। শোনা যায়না এসব পাখির মধুর ডাক।
আগে ভোরের ঘুম ভাঙতো পাখির কলতানে, অথচ এখন যান্ত্রিক যুগে ঘুম ভাঙে যানবাহন ও মাইকের শব্দে। রাতের প্রতিটি প্রহরে ডাকতো পাখি কিন্তু এখন প্রহর জানার যেন কোন উপায় নেই। এমনকি বলাবাহুল্য যে, বর্তমান প্রজন্মের অনেকে এসব পাখি চিনেই না, এসব পাখির ডাক শোনেনি কোন দিন। ফলে কিশোর-কিশোরীদের কাছে এসব পাখি হয়ে যাচ্ছে গল্প আর ইতিহাস। অবাক লাগে এদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল সেটিও আজ বই অথবা ছবিতে দেখে পরিচিত হয় শিশু-কিশোররা। তারা কখনো দেখেনি মুক্ত আকাশে উড়ান্ত এসব নামকরা পাখি, শোনেনি পাখির ডাকও।
সচেতনদের মতে, কৃষককূল কীট দমনে ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করে, এতে করে পাখির খাদ্য ফড়িং, ফুতি, প্রজাপতি, মশা, লেদা পোকা, গোয়ালিসহ বিভিন্ন প্রকার কীটপতঙ্গ আক্রান্ত হয় বা মারা যায়। আর এসকল মরা বা আক্রান্ত কীট খেয়ে পাখি মারা যাচ্ছে। খুলনার কপিলমুনির ৬৫ বছর বয়সী কৃষক ফজর আলী বললেন, “আমরা আগে জমিতে কীটনাশক দিতাম না। ফলে সে সময় মাঠেঘাঠে হরেক রকম পাখি নেচে বেড়াতো। ফসলী মাঠে পাখির অবাধ বিচরণের ফলে অতিষ্ঠ হয়ে মাঠে পাহারায় বসতে হতো, আবার কখনো নির্দ্দিষ্ট সময়ের আগেই ফসল ঘরে তুলতে হতো। আজ আর সেসব পাখি দেখা যায় না, পাখির ডাক শোনাও যায়না।’
পাখি শিকার দন্ডণীয় অপরাধ হলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় নির্বিচারে পাখি শিকার হচ্ছে। ফলে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য পাখি আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
Comments are closed.