April 27, 2024, 6:58 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
জাগ দিতে না পারায় হাজার কোটি টাকার পাট নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পাটচাষী

জাগ দিতে না পারায় হাজার কোটি টাকার পাট নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পাটচাষী

লতি বর্ষাকালে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়া, সীমাহীন লোডশেডিং এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। জেলার কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল মাঠে মারা যাচ্ছে। হাজার কোটি টাকার পাট নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পাটচাষি। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না বলে জানান চাষি। প্রচন্ড খরায় ক্ষেতেই শুকিয়ে মরে যাচ্ছে পাট। সময় পেরিয়ে গেলেও পানির অভাবে পাট কেটে জাগ দিতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার হাজার হাজার চাষিরা। খালে-বিলে পানি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পাট চাষিরা। বর্ষার ভরা মৌসুমেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়াসহ বর্ষার পানি খাল-বিলে না ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই বাধ্য হয়ে আশপাশের ক্ষুদ্র জলাশয়, ডোবা ও পুকুরে পাট জাগ দিতে হচ্ছে।

বেশি খরচ হওয়াসহ পাটের গুণগত মান কমে যাচ্ছে। আর পাটের শুভ্রবর্ণ বদলে কালো রং ধারণ করে ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। এতে পাটের বাজার মূল্য অনেক কম পাচ্ছে কৃষকেরা। এছাড়া ও যশোরে একই অবস্থা ছিল। দুই জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রিসেলসিয়াস। অন্যদিকে জেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার ২২ লাখ মানুষ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্থ গ্রামীণ জনজীবন। দিনে ও রাতে ৭/৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় মটর দিয়েও কৃষি জমিতে পানি দিতে পারছে না কৃষকরা। আবহাওয়া অফিস বলছে জুলাইয়ে ৫৭.৬ শতাংশ ও আগস্টে ৩৬ শতাংশ বৃষ্টি কমেছে। গেল আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টি কমেছে ৩৬.৪ শতাংশ। এর আগে জুলাই মাসে প্রায় ৬০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছিল। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও দেশে স্বাভাবিকের কম বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আগস্ট মাসে বায়ুমন্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকলেও তা থেকে মেঘ হতে পারেনি বলে মাসের বেশির ভাগ সময় বৃষ্টিহীন ছিল। তাছাড়া আগস্টে বাংলাদেশের উপর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বেশ দুর্বল ছিল। আগস্টে সারা দেশে গড়ে ৪০২ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়ে থাকলেও আগস্টে সারা দেশে গড়ে বৃষ্টি হয়েছে গড়ে ২৫৬ মিলিমিটার। এর আগে গত জুলাই মাসের ভরা বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছিল ৫৭.৬ শতাংশ। এককথায় বলা যায়, চলতি বর্ষাকালে বাংলাদেশে কাঙ্খিত বৃষ্টি হয়নি। প্রতিবছরই জুনের প্রথম হতে বর্ষার শুরু হওয়ার সম্ভবনা থাকলেও ১৫ জুনের পর হতে পুরোপুরি বর্ষা শুরু হয়। তবে এবার জুন, জুলাই ও আগষ্ট মাসও চলে যাওয়ার মতো হয়ে গেলেও দেখা নেই বৃষ্টির। পানির অভাবে কৃষকেরা তাদের জমিতে চারা লাগাতে পারছে না। আষাঢ় গিয়ে শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্র মাস চললেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ার দারুন পানির জন্য কৃষকদের হাহাকার শুরু হয়েছে। তাই পানি সংকটের কারণে অনেকেই কৃত্রিমভাবে পানির ব্যবস্থা করে বীজতলা প্রস্তুত করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টিপাত পরিস্থিতির হিসাব অনুসারে বিগত ২০২১ সালে জুলাই মাসে গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫৫.৫৮ মিলিমিটার। চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৫ জুলাই পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৯৯.৭৮ মিলিমিটার।

যা বিগত বছরের হতে ২৫৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত কম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮৭২ হেক্টর। সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, চাষিরা পাট কেটে জমির পাশে বা রাস্তার ধারে, খাল-বিল বা জলাশয়ের পাশে স্তুপ করে রেখেছেন। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা এবার পাট চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। পাট চাষের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে পানির সংকট। কৃষকেরা আশায় আছেন, বৃষ্টি হলে দূর হবে এই সমস্যা। কৃষকরা জানায়, একবিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় গড় ফলন ১০ মন। প্রতিমণ পাটের বর্তমান বাজার দর ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা। এ দামে পাট বিক্রি করলে তারা খুব বেশি লাভবান হবেন না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) সাতক্ষীরার উপ পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন চাষ কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে। পাট সংগ্রহে দেরি হতে পারে। তবে আমি আশাবাদি এখানো সময় রয়েছে, পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনাও রয়েছে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com