April 27, 2024, 10:36 am
বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সুমিলপাড়া বিহারি কলোনি থেকে গ্রেপ্তার ৩২ জনকে ছাড়িয়ে নিয়ে সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধরা। একপর্যায়ে তারা সকাল ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-ডেমড়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পাশাপাশি পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। তারপরই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আদমজী-চাষাড়া সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তারা আরও বলেন, বিক্ষোভকারীরা এ সময় সড়কে চৌকি, কাঠের গুড়িসহ বিভিন্ন মালামাল দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। এতে ওই পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আদমজী বিহারি কলোনির সড়কেও লোকজন জড়ো হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকায় আদমজী শাহী জামে মসজিদের ভেতরে এক পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ ১২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার ভোর পর্যন্ত ওই মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মুক্তির দাবিতে সকালে বিহারি কলোনির লোকজন সড়ক অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।
ওসি আরও বলেন, এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইট ছুড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক কাঁদুনে গ্যাস ও শতাধিক রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সুমিলপাড়া বিহারি ক্যাম্পের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পের ভেতর অভিযান চালিয়ে ৩২ জনকে আটক করে। শুক্রবার পুলিশের এসআইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় যারা ওই মসজিদে যাননি, যারা জড়িত নন তাদেরকেও আটক করা হয়েছে। অভিযানকালে অনেক নারী-পুরুষকে মারধর করা হয়েছে। এই কারণে ক্যাম্পের বাসিন্দারা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। লিয়াকত বলেন, তারা থানার সামনে গেলে পুলিশের তাদের লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে। অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তির দাবি করেন তিনি। এদিকে, মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জুম্মার নামাজের পর ইমাম সাহেব ভারতে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তখন এসআই আজিজুল হক অনুরোধ করেন যে, ভারতের ঘটনা সেখানে থাকুক। এখানে যেন কেউ বিশৃঙ্খলা না করে। তখনি তার ওপর হামলা হয় এবং তাকে মারধর করা হয়।
Comments are closed.