April 27, 2024, 9:26 am
নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (২৫ নভেম্বর) টিআইবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, অবহেলা ও পক্ষপাতিত্ব, আর্থিক অসচ্ছলতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশের অদক্ষতা, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং করোনা সংকটের কারণে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাসময়ে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় ধর্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারিতে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বহু গুণ বেড়েছে। নির্যাতিত নারীদের আইনি সহয়তা দেয়, এমন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব অনুযায়ী, গতবছরের তুলনায় এ বছর (মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ) নারী নির্যাতন ৭০ শতাংশ বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন ১৯২ জন। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে পারিবারিক নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৫ জন নারী।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) মামলায় দোষীদের সাজা কম হয়, এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারি নয়টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের মধ্যে একটির হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১১ হাজার নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে মাত্র এক শতাংশ ভিকটিম ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
বর্তমানে প্রায় ১৫০০ মামলায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে বিচার কার্যক্রম বন্ধ আছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করার মাধ্যমে বিচারহীনতার ঝুঁকি সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাধারণ ভুক্তভোগী যেখানে স্থানীয় পর্যায়ে থানা-পুলিশ করতেই হয়রানির শিকার হন, সেখানে উচ্চ আদালত পর্যন্ত মামলা পরিচালনা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই অনেকেই আইনের এই মারপ্যাঁচ ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তনু হত্যাকাণ্ড, নুসরাত হত্যাকাণ্ড, ফেনীর সোনাগাজীর ঘটনা, সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনার পেছনে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অদক্ষতা বা পক্ষপাতিত্ব, ক্ষমতা, প্রভাব ও রাজনৈতিক পরিচয়ের যে অশুভ আঁতাত দেশবাসী লক্ষ করেছে, তা সত্যি উদ্বেগজনক। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতির বার্তাবরণে প্রকৃত অর্থে দুর্বৃত্তরাই উৎসাহ পাচ্ছে।
Comments are closed.