April 27, 2024, 6:38 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
পদ্মা সেতু ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনা

পদ্মা সেতু ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনা

যে সেতু একটি সময় এদেশের মানুষের কাছে অধরা স্বপ্ন ছিলো সেটি আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে। প্রমত্ত পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে কোটি বাঙালির স্বপ্ন আর সক্ষমতার অনন্য প্রতীক পদ্মা সেতু। এর ৪২ টি পিলারের মধ্যেই লিপিবদ্ধ হয়েছে বাঙালির হার না মানার গল্প আর ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য মনোবল এবং দৃঢ়তার পরিচয়। যিনি সব আলোচনা সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নিরবে সহ্য করে এমন একটি দুঃসাহসিক কাজের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। গত ২৫ জুন বর্ণিল আলোকসজ্জায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে সাধারণ মানুষের যাতায়াত। দেশের পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগোষ্ঠী স্বপ্ন এখন পাড়ি দিবে পদ্মার বুকে স্ব গৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা সেতুর উপর দিয়ে। ভোগান্তিবিহীন সাধারণ মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে লাগবে সুবাতাস। সবকিছু মিলিয়ে এই ২১ টি জেলার মানুষ যে কত উচ্ছ্বসিত, উদ্বেলিত তা উদ্বোধনে দিনে তাদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনই বলে দিয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে থাকা বেশকিছু পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুতে নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের মধ্যে দিয়ে।

যার মধ্যে দিয়ে নতুন এক দিগন্তের স্বপ্ন দেখবে পর্যটন শিল্পে। বাড়বে পর্যটন স্থান কেন্দ্রিক সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান সাথে সরকারি রাজস্ব।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটের ঘা ঘেঁসে সুন্দরবনের একাংশ নিয়ে গড়ে উঠা দেশের ঐতিহ্যবাহী এ জনপদে রয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা। খুলনা জেলায় রয়েছে চিংড়ি শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প, করমজল, হিরণ পয়েন্ট, সাতক্ষীরার আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম, মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতসহ রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি। সাথে রয়েছে ঐতিহাসিক নিদর্শনের নানা স্থাপনা। এসব দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বঙ্গোপসাগরের তীরভূমি জুড়ে এক নয়নাভিরাম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত হলো মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। যেখানে একদিকে রয়েছে সুন্দরবন অপরদিকে বঙ্গোপসাগরের মায়াবী জলরাশির অবিশ্রান্ত গর্জন। যা বেশ উপভোগ্য।

বাগেরহাটের মংলা উপজেলার দুবলার চর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে হিরণ পয়েন্ট ও দুবলার চরের মাঝখানে বঙ্গোপসাগরে বঙ্গবন্ধু দ্বীপ অবস্থিত। এই স্থান থেকে পর্যটকদের সবথেকে বেশি আর্কষণ করে সুর্য্যােদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকনের দৃশ্যটি। এখানে রয়েছে নানা ধরনের লাল কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুকের সমারোহ। এ দ্বীপের একপাশে কাশবন অন্যপাশে সবুজ শ্যামল ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট। খুলনায় রয়েছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প। একটি সময় এই শিল্পটি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হলেও বর্তমানে আজ ক্রম-উন্নয়নশীল একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হয়েছে। দেশবিদেশ থেকে বহু পর্যটক আসেন জাহাজ নির্মাণ দেখতে। নৌ-বাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশে জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এজন্য উপকূলবর্তী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, তাদের কর্মসংস্থান, সরকারি রাজস্বে বাড়তি আয়সহ সবকিছুতেই এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চলেছে আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

এ সরকারের পর্যটক বান্ধব বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে এ শিল্পটি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু এসব পর্যটক স্থানে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেক বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকরা এসব স্থানে ঘুরতে এসে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে। আবাসিক হোটেল, বিনোদন কেন্দ্রের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতসহ নানা কার্যক্রমে তারা পর্যটকদের সাথে প্রতারণার ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অংকের টাকা। এছাড়া নির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকায় ইচ্ছামতো সুযোগ নেন কিছু ট্যুর অপারেটররা। পর্যটকদের থেকে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করেন তারা। শুধু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে এ পর্যটন খাত বিকশিত হতে এতো সময় লাগছে। তাই ভ্রমণের সময় পর্যটকদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তাদের চাহিদা অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত সেবা দেওয়ার মধ্যে দিয়েই প্রতিবছর এ খাত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় করা যাবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে এসব পর্যটন স্থনে দলালমুক্ত করা, ট্যুর অপারেটরদের একটি নিয়মনীতির মধ্যে আনার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। তাহলে পদ্মা সেতুর মধ্যে দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পর্যটন শিল্প আরো বেশি উন্নত হবে, সমৃদ্ধ হবে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com