April 27, 2024, 6:31 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
পাইকগাছার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গাছিরা

পাইকগাছার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গাছিরা

গ্রীষ্মকে বিদায় জানিয়ে শীতের আগমনে শুরু হয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুর গাছ তোলার কাজ। সারা দেশের ন্যায় তাই যেন বসে নেই সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চল দক্ষিণ জনপদের পাইকগাছা এলাকার গাছিরাও, প্রতিটি মুহূর্ত রস সংগ্রহের কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তারা। জানাযায়, পাইকগাছা উপজেলা বর্তমানে মাছে সমৃদ্ধশালী। ফসলী জমির সিংহভাগ এখন মাছ চাষীদের দখলে। তবে এক সময় এ অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ খেজুর গাছ থাকলেও আজ তার সংখ্যা অনেকটাই কম, তার পরেও যে একেবারে কম তা ঠিক নয়। যে গাছগুলো রয়েছে সেগুলোর থেকে রস সংগ্রহের জন্য পরিচর্যা করতেই যেন হিমশিম খাচ্ছেন গাছিরা। যারা গাছ কাটে তাদের বলা হয় গাছি। খেজুর গাছের অগ্রভাগের একটি নির্দিষ্ট অংশ চিরে বিশেষ ব্যবস্থায় ছোট কলসি (ভাড়) বাঁধা হয়। ফোঁটায় ফোঁটায় রসে পূর্ণ হয় সে কলসি। কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুলে গাছ তোলার কাজ করতে হয়। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছ তোলা কাটাসহ বিভিন্ন রকমের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই তোলা কাটা করতে হয়। খেজুর গাছের চাহিদাটা ইট ভাটায় বেশী ও ফসলী জমির একটা মোটাংশ লীজ ঘের হওয়ায় বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা বহুলাংশে কম। তাই যেন খেজুর গাছে বিলুপ্তির সুর বাজছে। তাছাড়া আগের মতো মাঠও নেই, নেই সারি সারি এই খেজুর গাছও। তারপরও গ্রামের মাঠে আর গ্রাম্য মেঠো পথের ধারে কতক গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের স্বাক্ষী হয়ে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, আমাদের গ্রাম বাংলায় অতীতে খেজুর রসের যে সুখ্যাতি ছিল তা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। খেজুরের রস শীতের সকালে বসে মুড়ি মিশিয়ে গ্লাস ভরে খেতে বেশ মজা লাগে। সন্ধ্যা রস আরো মজাদার। বেশ লোভণীয় নলেন পাটালি ও গুড়। খেজুর গুড় বাঙালীর সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। ক’দিন পরেই প্রতিটি ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা পুলি পায়েস তৈরীর ধূম পড়বে। ঢেঁকি ঘরে চাল কুটার ধুম পড়ে যাবে, শোনা যাবে ঢেকির ঢক ঢক শব্দ। মুড়ি, চিড়া, পিঠা খাওয়া কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার বাছে বেশ প্রিয়। এসব আশা নিয়ে শীত মৌসুমে গাছ কাটার কাজে গাছিদের বেশ ব্যস্ত সময় পার হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক হাজার গাছির সারা বছরের রুটিরুজির নির্ভর করে এ পেশার উপর। উপজেলার কাশিমনগরের জয়নাল গাছি জানান, শীতের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছ তোলার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করি। এভাবেই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা জ্বালিয়ে গুড় বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে বেশ আর্থিক সচ্ছলতা আসে আমাদের। তাই খেজুর গাছ তোলার মৌসুম এলেই গাছিদের মুখে ফুটে ওঠে রসালো হাসি। সংগৃহীত রস নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাকিটা বিক্রি করে যে অর্থ পান তা দিয়েই চলে গোটা বছর। এখনো শীত জেঁকে না বসলেও গাছ তোলা, ঠুঙি, দড়ি ও মাটির কলস (ভাড়) প্রস্তুতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তারা। আগের মতো আর খেজুর গাছ না থাকলেও মৌসুমের শুরুতেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গাছিরা।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com