April 27, 2024, 5:31 am
দেশে করোনা ভাইরাসের শনাক্তের হার নিম্নমুখী হলেও ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যুর হার। গত ১০ দিনে করোনায় গড়ে একশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়ে হাজার ছাড়িয়েছে, যেটি যেকোন সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। পরিসংখ্যান বলছে, গত দশ দিনে প্রতি ১৩.৫ মিনিটে গড়ে একজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি মাসে প্রতি ১৭.৯৩ মিনিটে গড়ে একজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১০ দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬৬ জন। আর চলতি মাসে ২৫ দিনে মৃত্যু হয়েছে ২০০৭ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ১২০ জন এবং নারী ২ হাজার ৯৩৩ জন।
করোনায় মৃতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রোববার (২৫ এপ্রিল) ১০১ জন, শনিবার (২৪ এপ্রিল) ৮৩ জন, শুক্রবার (২৩) ৮৮ জন, বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) ৯৮ জন, বুধবার (২১ এপ্রিল) ৯৫ জন, মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) ৯১ জন, সোমবার (১৯ এপ্রিল) ১১২ জন, রোববার (১৮ এপ্রিল) ১০২ জন, শনিবার (১৭ এপ্রিল) ১০১ জন, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ১০১ জন ও বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) ৯৪ জন মারা যান।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, করোনায় প্রথম মৃত্যুর পর গত বছরের ১০ জুন মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছায়। এরপর একই বছরের ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ অগাস্ট ৪ হাজার এবং ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। এর পরপরই করোনায় মৃত্যুর হার ধীরে ধীরে কমতে থাকে। পরবর্তিতে ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজার ছাড়ায়।
এরপর চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজারে পৌঁছায়। গত ৩১ মার্চ করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। আর চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে হাজার করোনা রোগীর মৃত্যু হলে তা ১০ হাজার ছাড়ায়। এ হিসেবে গত ১০ দিনে করোনার হাজার মৃত্যুর সংখ্যা যেকোন সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নমুনা বিবেচনায় করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। গত ১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিল ২১ শতাংশ। এরপর শুক্রবার শনাক্তের হার ছিল ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শনিবার এ হার ছিল ২১ দশমিক ৪৬, রোববার ১৯ দশমিক ৬, সোমবার ১৭ দশমিক ৬৮, মঙ্গলবার ১৬ দশমিক ৮৫ এবং বুধবার ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ১৪ দশমিক শূন্য ৬৩ শতাংশ, শুক্রবার ১৪ শতাংশ, শনিবার ১৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৪৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ হাজার ৯২২টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫০১টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রোববার ৪ হাজার ৩০১ জনসহ এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন।
বিশ্ব করোনা পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশ ৩৩তম অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনার জরিপ করা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী রোববার বিকেল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের দাড়িয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৪ জনে। মৃত্যু বরণ করেছেন ৩১ লাখ ১৫ হাজার ৩১৬ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, বর্তমানে ১ কোটি ৯২ লাখ ৩০ হাজার ৫৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার ৩২১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও ১ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার ২৬২ জনের অবস্থা স্থিতিশীল। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হয়েছেন ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ১৪৫ জন।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে আক্রান্তের সংখ্য ৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৩ জন ও মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮০ জন। সম্প্রতি ভয়াবহ রূপ নেয়া ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, যেখানে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ১৭২ জন আক্রান্ত ও ১ লাখ ৯২ হাজার ৩১১ জন মৃত্যু বরণ করেছেন। অন্যদিকে, করোনার উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে, সেখানে ৯০ হাজার ৫৮৮ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৬ জন।
Comments are closed.