April 27, 2024, 7:18 am
সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত কথিত রাজাকারের তালিকায় রাষ্ট্র স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে জানা গেছে ওই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মো. মজিবুল হকের (নয়া ভাই) নাম। যাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোবেসে ‘হক চাচা’ বলে সম্বোধন করতেন।স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মুজিবুল হকের প্রচেষ্টায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা রাজাকারমুক্ত হয়েছিল। অথচ দেশের জন্য নিরলস কাজ করে যাওয়া এই মানুষটির নাম এখন রাজাকারের তালিকায়।মজিবুল হকের মেজো ছেলে অ্যাডভোকেট রেজাউল হক শাহীন জানান, ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন পাথরঘাটা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান। সেই মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে। ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের টানা ৪০ বছরের সভাপতি।আজীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করে যাওয়া ‘নয়া চাচা’র ৮ সন্তান নিয়ে টানাটানির মধ্যে সংসার চললেও সততার সঙ্গে কোনোদিনও আপোস করেননি। নিজের টানাটানির সংসার নিয়ে নিয়ে তার বিন্দুমাত্র আক্ষেপও ছিল না।এমন একজন ত্যাগী মানুষের মৃত্যুর পর এভাবে সম্মানহানির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার পরিবার ও এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ।অ্যাডভোকেট রেজাউল হক শাহীন আরও বলেন: তালিকা প্রকাশের পর প্রথম রাত খাওয়া-দাওয়া একদম বন্ধ হয়ে গেছিল। এ যে কী লজ্জার তা আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বুঝেছি।‘‘সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন আমার মা নুরজাহান বেগম (৮৫)। কারণ আমার বাবার রাজনীতির কারণে সবচেয়ে বেশি সাফার করেছেন আমার মা।’’আমার বাবা ৬০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন: ‘আমরা সবসময় দেখেছি আমাদের বাসায় শত শত মানুষ আসতো। তাদের খাওয়া-দাওয়ার সব ব্যবস্থা আমার মা করতেন। সেই বাবার নাম যখন রাজাকারের তালিকায় তখন আমার ৮৫ বছর বয়সী মায়ের জন্য এটা সহ্য করা খুব কষ্টের।’
Comments are closed.