April 27, 2024, 11:38 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
ফুলরাজ্যের রানী সাজেদা

ফুলরাজ্যের রানী সাজেদা

??????

চারদিকে ফুল আর ফুল। ইতিমধ্যেই স্থানটি পরিচিতি পেয়েছে ফুলের রাজধানী হিসাবে। ফুলের এই রাজ্যে ফুল চাষ করছেন অনেকেই। সফলও হয়েছেন তারা। প্রায় সবাই পুরুষ। এর মধ্যে সফলতা নিয়ে ফুলরাজ্যের রানী হয়ে উঠেছেন সাতক্ষীরার মেয়ে সাজেদা বেগম। জীবনযুদ্ধে হার না-মানা নারী তিনি। আত্মপ্রত্যয়ী এ নারী যশোরের গদখালি-পানিসারা এলাকায় এখন নারীদের অনুপ্রেরণা।

সাতক্ষীরা পৌর এলাকার পারকুখরালী সরদার পাড়ার সাজেদার জন্ম ১৯৮৪ সালে। সাত ভাই বোনদের মধ্যে ষষ্ঠ। তার বাবা আতিয়ার সরদার ও মা আকিমন বেগম। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা সাজেদা বেগমের ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে হয় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ইমামুল হোসেনের সঙ্গে। মোটামুটি ভালোই চলছিল তাদের সংসার। বিয়ের প্রায় ৮ বছর পর ২০০৪ সাসে বাড়ির সামনে শিশু গাছ থেকে পড়ে ইমামুল হোসেনের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো আকস্মিক এ দুর্ঘটনায় দিশাহারা হয়ে পড়েন তিনি।

সাজেদা বেগম বলেন, ‘অসুস্থ স্বামীকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। স্বামীর চিকিৎসায় প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়ি। এরপর ধার দেনা করে স্বামীর অনুপ্রেরণা ও তার ফুলচাষের অভিজ্ঞতা, পরামর্শকে পুঁজি করে নিজেদের ১০ কাঠা জমিতে শুরু করি জারবেরা ফুল চাষ।’

এতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ মাস পরেই প্রায় ৮০ হাজার টাকার জারবেরা ফুল বিক্রি করেন তিনি। ফুলচাষে এমন লাভ হওয়ায় উৎসাহ বেড়ে যায় তার। আত্মপ্রত্যয়ে আর পিছনে ফিরে তাকাননি তিনি। নিরলস পরিশ্রমের সঙ্গে পারিবারিক দায়বদ্ধতা ধীরে ধীরে ফুল চাষে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন সাজেদা বেগম।

তিনি জানান, ‘নারী হিসেবে সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে ফুলচাষি জীবনের শুরুর ওই বছরই আরও দুই বিঘা জমিতে গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা ফুলের চাষ শুরু করেছিলাম। এখন পাঁচ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ফুল চাষ ছাড়াও ড্রাগন, ধান, পাট, শর্ষে ও সবজি চাষ করছি।’

জারবেরা ফুল উৎপাদনের জন্য তিনটি সেড তৈরি করেছেন তিনি। যা আম্ফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে দুটো সেড জোড়াতালি দিয়ে ঠিকঠাক করে ফুলচাষ শুরু হয়েছে। আম্ফান ঝড়ের আগে ১৫ কাঠা জমিতে রজনীগন্ধা, দেড় বিঘা জমিতে জারবেরা, এক বিঘা জমিতে গাঁদা, ১০ কাঠা জমিতে গ্লাাডিওলাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করেন।

সাজেদা বেগম জানান, তখন পাঁচ বিঘা জমিতে নানা জাতের ফুল চাষ করে খরচ বাদে মাসিক আয় হতো ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এ আয় দিয়ে বড় অনার্স পড়ুয়া বড় মেয়ে তানিয়া ইয়াসসিন ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মাইনুল ইসলাম জয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি পঙ্গু স্বামীকে নিয়ে ভালোই চলছে সংসার।

সাজেদা বলেন, ‘স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর যখন সংসারের হাল ধরি তখন বসতঘর ছিল খড়ের। এখন স্বামী সন্তানদের নিয়ে ইটের বসতবাড়িতে থাকতে পারছি। তাছাড়া নিজের সংসার দেখাশোনার পাশাপাশি ফুলের জমিতে দৈনিক পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন।’

তিনি বলেন বলেন, ফুল চাষ করে সংসার খরচ ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ভালোই যাচ্ছিল। করোনাভাইরাস ও আম্পান ঝড় সব কিছু উল্টোপাল্টা করে দিয়েছে। পাঁচ-ছয় মাস ধরে আমরা খুব বিপদে আছি। স্কুল-কলেজপড়ুয়া সন্তানদের সহযোগিতায় ফুলের সেড মেরামত করেছি। সরকার যদি সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ দেয় তাহলে আমাদের মতো চাষিরা উপকৃত হবেন বলে জানান তিনি।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com