April 27, 2024, 8:15 am
দেশের দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে কলারোয়া, সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার ২৩৮ কি: মি: এলাকা জুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। এ দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাপথ দিয়ে অবাধে আসছে মাদক ও অস্ত্র, বিনিময়ে পচার হয়ে যাচ্ছে স্বর্ণ। এছাড়া অবাধে চলছে রমরমা হুন্ডির কারবার। আর এসব মাদক, অস্ত্র, স্বর্ণ ও হুন্ডি চোরাচালানে জেলাব্যাপি গড়ে উঠেছে বহু ছোট-বড় চোরাচালান চক্র। এসব চক্রের সাথে সম্পৃক্তরা রাতারাতি ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ হয়েছে। অগাধ অবৈধ অর্থ সম্পদ ব্যাবহার করে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা জুড়ে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। অবৈধ অর্থের বিনিময়ে তারা কেউ সরকার দলীয় রাজনৈতিক, জনপ্রতিনিধি আবার কেউ নামধারী সাংবাদিকও হয়েছেন। কেউ বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী, সমাজসেবক ও দানশীল হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। অনেকে আবার নামমাত্র বৈধ ব্যাবসার আড়ালে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে চোরাকারবার।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখাগেছে, কলারোয়ার ভাদিয়ালি, কেড়াগাছি, কাকডাঙ্গা সীমান্ত। সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা, বৈকারি, কুশখালি, তলুইগাছা, ঘোনা, শাঁখরা সীমান্ত। দেবহাটার নাংলা, ভাতশালা, খানজিয়া, পদ্ম শাঁখরা সীমান্ত। কালিগঞ্জের বসন্তপুর, হিঙলগঞ্জ সীমান্ত। শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন কৈখালী ইউনিয়নের পুরো ১৪ কি: মি: জলসীমা ছাড়াও রমজাননগর, নুরনগর সীমান্ত দিয়ে দেদারসে চলছে অস্ত্র, মাদক, স্বর্ণের চোরাকারবার। এসব সীমান্তে বিজিবি’র কড়া নজরদারির ফলে মাঝেমধ্যে বড়সড় মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণের চালান আটক হলেও বেশির ভাগ চোরাচালান নির্বিঘেœ পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে। আটক হওয়া চোরাচালানের সাথে গ্রেপ্তার হয় বহনকারী বা মধ্যস্থতাকারী।
অপরদিকে পর্দার আড়ালে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় চোরাচালানের মূল মালিক বা চোরাচালান চক্রের গডফাদাররা। হামলা-মামলার ভয় না থাকায় সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় দিনের পর দিন বেড়েই চলছে চোরাকারবারি চক্র ও তাদের সদস্য সংখ্যা। আর নগত টাকা, রুপি বা ডলার হুন্ডি কারবারি চক্রগুলো অনেকটাই স্বাধীনভাবে চুপিসারে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কারবার। ঠান্ডাঘরে বসে এসব সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বিঘ্নে ভারতীয় ভয়ংকর সব মাদক ও অস্ত্রে সয়লাব করে ফেলেছে। এতে করে দেশে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজী ও মাদকের আগ্রাসন বেড়েছে বহুগুণ। সমাজের সাধারণ মানুষও জানে তারা চিহ্নিত চোরাকারবারি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় তাদের নাম থাকার পরও জেলার শীর্ষ চোরাকারবাররা রয়েছে বহাল তবিয়তে। এসব রাষ্ট্র বিরোধী সমাজ বিধ্বংসী চোরাকারবারিদের প্রতিহত করতে সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেছেন সচেতন সুধীজন।
Comments are closed.