April 27, 2024, 9:39 am
জীব ও প্রাণি বৈচিত্র্যে ভরপুর বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন। সুন্দরবনে ২২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রকার উভচর ও ৩শ’ প্রজাতির পাখির বসবাসস্থল। কিন্তু ক্রমেই বিলুপ্তের সম্মুখীন হচ্ছে সুন্দরবনের এই প্রাণিকূল। এসব প্রাণি বিলুপ্তির পেছনে মানুষের ভূমিকাই প্রধান। অনিয়ন্ত্রিত উপায়ে বনভূমি উজাড় হওয়ায় বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণি। নির্বিচারে গাছ কর্তন, কৃষি ভূমির সম্প্রসারণ, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ নানা কারণে বন্যপ্রাণির আবাস ভূমির ব্যাপক ধ্বংস সাধন হচ্ছে। এছাড়া জেলেদের ব্যবহৃত কীটনাশক বনের জলাশয়গুলোতে বিষক্রিয়া করার কারণও বটে। বন্যপ্রাণিদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব, জন্মহার হ্রাস, বাচ্চা পালন ও ডিম ফোটানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাণির আবাস বড় গাছ কেটে ফেলা ক্ষতির অন্যতম কারণ। বৈশ্বিক উঞ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততার প্রতিক্রিয়াও বন্যপ্রাণির জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে প্রজাতির মধ্যে আছে বাঘরোল, চিতা বিড়াল, ভোঁদড়, সর্দার গুঁইসাপ, গুঁই সাপ, কাঠা, কচ্ছপ, ময়াল, দৈত্য বক, সাদা পেঁচা, সমুদ্র ঈগল, মেছো বাঘ, সাগর কাঁকড়া, সাগর কুসুম, সাগর শসা, শকুন, পেঁচা, রক্তবর্ণ মেছো শামুক, মিঠে পানির কুমির, নীল গাই, সারস পাখি প্রভৃতি সচারাচর দেখা গেলেও গত ১ যুগে এগুলোর সংখ্যা ক্রমন্বয়ে দেখা মিলছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত উপায়ে বনভূমি উজাড় হওয়ায় বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণি। নির্বিচারে গাছ কর্তন, কৃষি ভূমির সম্প্রসারণ, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ নানা কারণে বন্যপ্রাণির আবাস ভূমির ব্যাপক ধ্বংস সাধন হচ্ছে। এছাড়া জেলেদের ব্যবহৃত কীটনাশক বনের জলাশয়গুলোতে বিষক্রিয়ার কারণে এইসব প্রাণী বিলুপ্তের পথে। বিশেষ করে শকুন বিলুপ্ত হওয়ার কারণ গবাদিপশুর শরীরে ডাইক্লোফেন ঔষধ মাংসে ব্যবহারের কারনে শকুনের যৌন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে যার ফলে তাদের বংশবিস্তার হচ্ছে না। এভাবে এই শকুন বিলুপ্তের পথে হারিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয় শ্যামনগর উপজেলা প্রাণি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকার এই কারণে ডাইক্লোফেন ঔষধ বন্ধ করলেও পাশ্ববর্তী ভারত থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশে নিয়ে বিক্রি করছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় সরকার এরই মধ্যে কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর রাশিয়া ফেডারেশন এবং বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় বাঘ সংরক্ষন শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ নগরীতে বাঘ সংরক্ষণ সংক্রান্ত শীর্ষক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে মানুষের বাসযোগ্য করতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বন্যপ্রাণির বিলুপ্তি রোধ করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় এখনই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পাচারকারী ও শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগসহ পর্যটকদের সচেতন করতে হবে বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।
Comments are closed.