April 27, 2024, 9:58 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
বিশ্ব বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ

বিশ্ব বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ

আমার আজকের আলোচনার বিষয় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেবকে নিয়ে। তিনি শুধু ভারত বর্ষের নয় সমস্ত পৃথিবীর একজন নামীদামী শিল্পী। তিনি ৮ই অক্টোবর ১৯৬১ সালে বাংলাদেশের বাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকে তাঁর সঙ্গীত শিক্ষার প্রবল আগ্রহ ছিল। এক প্রকার তিনি সঙ্গীত পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ সাবদার আলী খাঁ (সাধু খাঁ) ও মাতার নাম সুন্দরী বেগম। ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। পিতা সহ তাঁর চার পুত্র সবাই ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ। খাঁ সাহেবের স্ত্রীর নাম মদিনা বিবি। তাঁর স্বনামধন্য পুত্র ওস্তাদ আকবর আলী খাঁ পৃথিবীর নামকরা সরোদ বাদক। পন্ডিত রবি শংকর ছিলেন আলাউদ্দীন আলী খাঁর শিষ্য। আলাউদ্দীন আলী খাঁ ছেলেবেলায় সঙ্গীতে প্রথম তালিম নেন তার বড় ভাই ফকির (তাপস) আফতাব উদ্দীন খাঁর কাছে। তিনি মাঝে মধ্যে যাত্রা দলেও কাজ করেছেন। সঙ্গীত শিক্ষার টানে আলাউদ্দীদ আলী খাঁ ঢাকায় চলে আসেন। কিছুদিন ঢাকায় থাকার পর কলকাতার উদ্দেশ্যে সঙ্গীত শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। সম্বল তাঁর কাছে মায়ের দেওয়া মাত্র ১২ টাকা। সারাদিন কলকাতার পথে পথে ঘুরে ক্ষুধার্ত হয়ে এক রাস্তার পাশে সুয়ে ছিলেন। এমন সময় সৃষ্টিকর্তার কী অসীম দয়া, দেখা হয়ে গেল বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্যের সাথে। তিনি খাঁ সাহেবকে বাড়ি নিয়ে গেলেন। তারপর সাত বছর ধরে তিনি গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্যের কাছে সঙ্গীতের তালিম নেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন। থিয়েটারে এক সময় তবলা বাজিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। তিনি সমস্ত পৃথিবীর সেরা রাগ প্রধান গানের শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এছাড়া সরোদ ছিল তার খুব প্রিয়। এই সরোদ বাজানোর মাধ্যমে তিনি জগৎ বিখ্যাত শিল্পী হয়ে ওঠেন। এছাড়া তবলা, সানাই, ক্লানিওয়েট, সাকসেস ফোন, ট্রাম্পেট, বীণা, সুর শৃঙ্গার ইত্যাদি বাজাতে পারতেন। তার মনে আরও সঙ্গীত শিক্ষার প্রবল ইচ্ছা জাগল। তিনি শুনেছেন রামপুরার হামিদ আলী খান বাহাদুরের সভাবাদক হিসেবে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তানসেনের বংশধর ওস্তাদ ওয়াজিস খাঁ রাজসভায় আছেন। তিনি মনে মনে ঠিক করলেন ওস্তাদ ওয়াজিস খাঁ সাহেবের শিষ্য হবেন এবং সঙ্গীতে তাঁর কাছে তালিম নিবেন। কিন্তু তার দেখা পাওয়া কী এতো সহজ? তাঁর সাথে দেখা করার জন্য একাধিকক্রমে তিন মাস প্রাসাদের নিকট দাঁড়িয়ে থেকেও তাঁর সাথে দেখা মিলল না। কাছেই ছিল মসজিদ। মসজিদের ইমাম সাহেবের নিকট খাঁ সাহেব সব ঘটনা খুলে বললেন। ইমাম সাহেব একটি যুক্তি দিলেন। যখন নবাবের গাড়ি যাবে, তখন ছুটে গিয়ে আত্মহত্যার জন্য গাড়ির সামনে যেয়ে পড়বে। যেমন কথা তেমনি কাজ। যখন নবাব সাহেব বেরিয়ে যাচ্ছেন গাড়িতে, তখন খাঁ সাহেব গিয়ে গাড়ির সামনে সুয়ে পড়লেন। নবাবের লোকজন গাড়ির সামনে থেকে তাকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন। নবাব বললেন, লোকটিকে আমার কাছে নিয়ে এসো। তাঁকে প্রশ্ন করলেন, তুমি মরতে যাচ্ছিলে কেন? পকেটে ছিল সুইসাইড নোট, সেটি নবাব সাহেবকে দিয়ে দিলেন। ঐ সুইসাইড নোটে সবকিছু লেখা ছিল। নবাব সেটি পড়ে তাকে রাজসভায় নিয়ে যাওয়ার জন্য হুকুম দিলেন। সেখানে অনেক বাদ্যযন্ত্র আছে। সেগুলি দেখিয়ে নবাব বললেন, এই গুলির ভেতর থেকে তুমি কোনটি বাজাতে পারো? সেটি আমাকে বাজিয়ে শোনাও। আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেব বললেন, এখানে যে বাদ্যযন্ত্র গুলি আছে আমি সব বাজাতে পারি। নবাব বললেন, আমাকে একটু একটু করে বাজিয়ে শোনাও তো। নবাব ছিলেন সঙ্গীত অনুরাগী। তিনি বাজনা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলেন। একটি মানুষের পক্ষে এতগুলি বাদ্যযন্ত্র বাজানো দুঃসাধ্য ব্যাপার। নবাব সাহেব খুশি হয়ে একথালা স্বর্ণ মুদ্রা এবং ভালো ভালো খাবার পরিবেশন করার জন্য কর্মচারীদের হুকুম দিলেন এবং সাথে সাথে সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ ওয়াজিস খাঁ সাহেবকে ডাকলেন এবং বললেন, আজ থেকে এই ছেলেটি তোমার শিষ্য হিসেবে রাজপ্রাসাদে থাকবে। তারপর আর খাঁ সাহেবের পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি শুধু ভারতবর্ষের নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরোদ বাজিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। একবার আন্তর্জাতিক সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ভারতবর্ষ থেকে তিনজন শিল্পীকে নির্বাচন করা হয়েছিল। ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ, শিষ্য পন্ডিত রবি শংকর ও বড়ে গোলাম আলী খাঁ সাহেব। সঙ্গীত প্রতিযোগিতার জন্য তারা পাড়ি জমালেন লন্ডনের উদ্দেশ্যে। সবাই গিয়ে উঠলেন লন্ডনের একটি হোটেলে। ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেব ছিলেন অত্যন্ত সাদাসিধে এবং ধর্মভীরু। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। তিনি এতবড় একজন গুনী মানুষ হয়েও সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করতেন। হোটেল ম্যানেজার সাহেবকে পন্ডিত রবি শংকর বললেন, আমরা দুইজন একটু বাইরে যাচ্ছি, আমাদের আরেক জন সফর সঙ্গী ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেব হোটেলে থাকছেন। আমরা হোটেলে না ফেরা পর্যন্ত তাকে বাইরে যেতে দিবেন না। খাঁ সাহেব সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লেন। হাঁটতে হাঁটতে সামনে যেয়ে দেখেন বড় একটি বাদ্য যন্ত্রের দোকান। ব্যাস, তিনি সেখানেই ঢুকে পড়লেন এবং সেই দোকানের কর্মচারীকে বললেন, আমাকে একটি সরোদ দাও তো। কর্মচারী মনে করল, মানুষটি সাদাসিধে এবং গরীব। তাই দোকানের সবচেয়ে নিম্নদামের সরোদটি তাকে দেখতে দিলেন। খাঁ সাহেব সরোদটি একটু দেখে বাজাতে শুরু করলেন। বাজাতে বাজাতে একেবারে চোখ বন্ধ করে সুরের জগতে ঢুকে পড়লেন। দোকানের কর্মচারী ও অন্যান্য খরিদ্দার তারা সরোদের বাজনা শুনতে লাগল। এরপর আস্তে আস্তে লোকজন ভিড় করতে শুরু করল। ক্রমান্বয়ে দোকানের বাইরেও মানুষ দাঁড়িয়ে সরোদের বাজনা শুনতে লাগল। তারপর রাস্তায় গাড়ি ঘোড়া সব বন্ধ হয়ে গেল। খাঁ সাহেবের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। এদিকে হোটেলে এসে পন্ডিত রবি শংকর ও বড়ে গোলাম আলী খাঁ দেখলেন খাঁ সাহেব হোটেলে নেই। মাথায় তাদের বাজ পড়ল। রাত পোহালে প্রোগ্রাম, এখন কি করা যায়? তারা দুইজন হোটেল থেকে বেরিয়ে পথ ধরে খুঁজতে থাকলেন। অনেক খোঁজাখুজির পরেও পাওয়া গেল না। এরপর বড়ে গোলাম আলী খাঁ লক্ষ্য করলেন। রাস্তার পাশে বহু লোক দাড়িয়ে আছে, যানবাহন সব বন্ধ হয়ে আছে। বড়ে গোলাম আলী খান বললেন, ওখানে নেই তো? আরও বললেন, চল তো, সেখানে গিয়ে আমরা দেখে আসি। যেয়ে দেখলেন, খাঁ সাহেব ওখানেই আছেন। সরোদ বাজাচ্ছেন তো বাজাচ্ছেনই, পৃথিবীর কোন দিকেই তার খেয়াল নেই। তারপর শিষ্য পন্ডিত রবি শংকর যেয়ে খাঁ সাহেবকে ডাকলেন, তখন তাঁর চৈতন্য হলো। তাকিয়ে দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন, শত শত লোক দাড়িয়ে আছে দোকানের সামনে। গাড়ি ঘোড়া সব বন্ধ। খাঁ সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন পন্ডিত রবি শংকরকে, এখানে এত লোক কেন? উত্তরে রবি শংকর বললেন, আপনার কারণে। তারপর দোকানদার খুশি হয়ে দোকানের সর্বোচ্চ দামের সরোদটি বিনামূল্যে তাকে উপহার হিসেবে দিলেন। রাস্তার দিকে দাড়িয়ে থাকা লোকজনকে সরানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য নিতে হয়েছিল। এরকম খাঁ সাহেবের জীবনে অনেক ঘটনা আছে। তার একটি মাত্র উল্লেখ করলাম। পরের দিন মিউজিক প্রোগ্রাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শিল্পীরা এসেছেন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। প্রোগ্রাম শুরু হলো। অন্যান্য শিল্পীরা যে মর্যাদা পাচ্ছেন, মনে হয় বাঙালি বলে সে মর্যাদা তিনি পাচ্ছেন না। সবার বেলায় শিল্পীদের ২০ মিনিট করে সময় দেওয়া হলো কিন্তু ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেবের বেলায় সময় দেওয়া হলো মাত্র ০৫ মিনিট। যখন তার নাম ঘোষণা করা হলো, তখন লোকজন উঠতে শুরু করেছে। সবাই মনে করছে বাঙালি সে আর কি বাজাবে। মাঠ একেবারে ফাঁকা, খাঁ সাহেব সৃষ্টি কর্তার নাম নিয়ে যখন তিনি সরোদ বাজাতে শুরু করলেন, সেই সরোদের বাজনা শুনে তখন যে সমস্ত লোকজন মাঠ ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন আবার তারা মাঠের দিকে ফিরতে শুরু করলেন। দেখতে দেখতে মাঠ ভরে গেল। কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়ে ১০ মিনিট, তারপর শ্রোতাদের অনুরোধে আরও ০৫ মিনিট, তারপরে আরও ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হলো। যা অন্য কোন শিল্পীর বেলায় এতটা সময় দেওয়া হয়নি। খাঁ সাহেব বলেছিলেন, আমার সঙ্গীত জীবন আজ সার্থক হয়েছে। কারণ আমি শ্রোতাদের চোখে সেদিন পানি দেখেছিলাম। তারপর সেখান থেকে তারা আমেরিকা, রাশিয়া, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রোগ্রাম করে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। তিনি মাইহারে একটি মিউজিক কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। চন্দ্র সারাং ও সুর শৃঙ্গার এই বাদ্য যন্ত্র দুইটি তিনিই আবিষ্কার করেন। এছাড়া ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেব যে সমস্ত রাগ রাগনী সৃষ্টি করেন তার মধ্যে হেমন্ত, দূর্গেশ্বরী, মেঘবাহার, প্রভাত কেলী, মেহবেহাগ, মদনমঞ্জুরী, মোহাম্মদ (আরাধনা), মানঝ, খাম্বাজ, ধবলশ্রী, সরস্বতী, ধনকোশ, শোভাবতী, রাজেশ্রী, চন্ডিকা, দিপীকা, মলয়া, কেদার, ভূবনের্শ্বরী ইত্যাদি। এ থেকে বোঝা যায় তিনি কত বড় মাপের শিল্পী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী সাহেবের পুত্র ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ ও তার শিষ্য জগৎ বিখ্যাত শিল্পী পন্ডিত রবি শংকর ও তাদের মার্কিন বন্ধু খ্যাতিমান শিল্পী জজ হ্যারিসন তিন জন মিলে নিউয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারে আয়োজন করেন মিউজিক কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। কনসার্টের প্রাপ্ত অর্থ যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে যেমন বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তেমনি ওস্তাদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ সাহেব সঙ্গীতের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি ঘটিয়েছেন। ১৯৭১ সালে বিদেশে কনসার্ট করে প্রাপ্ত অর্থ পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের সাহায্যের জন্য। কিন্তু আমি জানিনা বাংলাদেশ সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে তার পৈত্রিক ভিটা যথাযথ মর্যাদায় সংরক্ষন করা হয়েছে কিনা। যদি হয়ে থাকে তাহলে তো খুবই ভালো। আর যদি না হয়ে থাকে সরকার যেন একজন বিশ্ব বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে তার পৈত্রিক ভিটা সংরক্ষনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কারণ বাংলাদেশ এই পরিবারটির কাছে চিরঋণী। তৎকালীণ বৃটিশ সরকার তাকে খাঁ সাহেব উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৫২ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৫৪ সালে ভারত সরকার কর্তৃক সঙ্গীত ও নাটক একাডেমিক ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে তাকে পদ্মবিভূষণ উপাধি দেওয়া হয়। ১৯৬১ সালে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দেশী কোত্তম উপাধিতে ভূষিত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল তাকে আজীবন সদস্যপদ দান করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বলেছিলেন, জীবনে আমি কিছুই শিখতে পারলাম না। সৃষ্টিকর্তা যদি আমাকে তিনশত বছর আয়ু দিতেন তাহলে হয়ত সামান্য কিছু শিখতে পারতাম। তিনি আরও বলেছেন, শিক্ষার কোন শেষ নেই। অবশেষে এই বিশ্ব বরেণ্য শিল্পী পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ১৯৭২ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ১১০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com