April 27, 2024, 9:18 am
সুপার সাইক্লোন সিডরের ১৪ বছর আজ। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাগেরহাটসহ উপকূলীয় কয়েকটি জেলা। সরকারি হিসেবে এই দিনে প্রায় ৯০৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো সিডরের আঘাতে। আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল কয়েকশ কোটি টাকার।
গত ১৪ বছরে স্বজন হারানো বেদনা ও আর্থিক ক্ষতি ভুলে বাগেরহাটের শরণখোলা-মোরেলগঞ্জবাসীর একমাত্র দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। গণ মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার ২০১৫ সালে সাড়ে ৩শ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে একটি প্রকল্পের অধীনে মোরেলগঞ্জ থেকে শরণখোলা উপজেলার বগী-গাবতলা পর্যন্ত ৬২ কিলোমিটার টেকসই বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। বেড়িবাঁধের প্রায় ৫৮ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হলেও অরক্ষিত রয়ে গেছে সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা আশার আলো মসজিদ থেকে বগী, তেরাবাকা-শরণখোলা পর্যন্ত চার কিলোমিটার বাঁধ। এই চার কিলোমিটার বাঁধ এখনও নিচু রয়ে গেছে। এখানে ব্লক দেওয়া শুরু করেনি। এই বাঁধে মাটির পরিবর্তে বালু দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এই চার কিলোমিটার বাঁধ দিয়ে প্রতিবছর কয়েকবার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় কয়েকটি গ্রামের হাজারেরও বেশি পরিবার। অনেক সময় পানিবন্দিও থাকতে হয় ৭ থেকে ১০ দিন ধরে।
স্থানীয় সিদ্দিক ফকির, সিয়ামসহ কয়েকজন বলেন, সিডরের পর থেকে আমাদের একমাত্র দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ। কিন্তু ১৪ বছরেও আমাদের এখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ শেষ করতে পারেনি সরকার। কোথায় যাব আমরা। প্রতিবছরই ঝড়-জলোচ্ছাসে আমাদের জানমালের ক্ষতি হয়। এভাবে চলতে থাকলে অন্যান্যদের মত এলাকা ছেড়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না আমাদের।
শরণখোলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত বলেন, সিডর বিধ্বস্ত মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বর্তমান সরকার ব্যাপক কাজ করেছে। এ জন্য আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধের নামে যে বাঁধ করেছে তা পরিকল্পিতভাবে হয়নি। পর্যাপ্ত স্লুইজ গেট না থাকায় এই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এদিকে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত মোরেলগঞ্জবাসীর দাবি পানগুছি নদীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। একের পর এক আশ্বাসের পরে বাঁধ নির্মাণ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
সিইআইপি প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ নির্মাণের ৯৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে আড়াই কিলোমিটার বেরিবাঁধের কাজ চলছে। আশা করি আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করতে পারবো।
Comments are closed.