April 27, 2024, 9:28 am
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে মানববন্ধন করেছে। ২০শে জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবসকে সামনে রেখে রোববার (১৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তারা বিশ্বের কাছে পাঁচটি দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলো হলো- যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন ও পুনঃএকিভূতকরণ, মিয়ানমারের বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন বাতিল, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রত্যাবাসনের পর আইডিপি ক্যাম্পের পরিবর্তে নিজস্ব গ্রামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ ও বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।
সমাবেশে রোহিঙ্গারা, মানবিক বিবেচনায় অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। খাদ্য, আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য তারা জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমূহের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তারা বলেনে, বাংলাদেশ তাদের নিজের দেশ নয়। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য স্বদেশে ফিরে যাওয়া এবং রাখাইনে নিজ ভূমিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা। ২০১৭-২০১৮ সালে জাতিসংঘ ও চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু এরপর পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ক উল্লেখযোগ্য ও কার্যকর কোন অগ্রগতি নেই। এমনকি বিশ্ব সম্প্রদায়ও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কথা ভুলতে বসেছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০শে জুন আন্তর্জাতিক শরনার্থী দিবসকে সামনে রেখে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে তাদের দাবি তুলে ধরে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গারা বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্রহীন গোষ্ঠী। ২০১৭ সালে দেশ থেকে বিতাড়নের পাঁচ বছর হয়েছে। কিন্তু আর কত দিন তারা উদ্বাস্তু হয়ে থাকবে এই প্রশ্ন তুলে ধরেন রোহিঙ্গা নেতারা। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জঘন্য নৃশংসতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকেরা নির্যাতিত হয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে বিতাড়িত হয়েছিল যা ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে ভয়াবহ দেশত্যাগ হিসেবে বিবেচিত। রাখাইন রাজ্যে ১৯৭৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক বৈষম্য, নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা এবং গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মত ভয়াবহতার সম্মুখীন হয়েছে। শুধুমাত্র ২০১৭ সালে ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয় এবং বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়।
Comments are closed.