April 27, 2024, 8:50 am
পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর নবজাতককে হত্যার অভিযোগে মা-মেয়েকে আটক করেছে। যশোরের শার্শা থানা পুলিশ নবজাতক হত্যার অভিযোগে দায়েরকরা মামলার কুলকিনারা করতে না পেরে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। কিন্তু আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিলে পিবিআই তদন্তের এক পর্যায়ের এই হত্যার রহস্য উন্মোচনে সফল হয়েছে ।
তাদের হাতে আটক হয়েছে ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী কদভানু (৬৬) ও তার মেয়ে মাসুরা বেগম (৩০)।
পিবিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শার্শা উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের কওসার আলীর পরিত্যক্ত একটি পুকুর থেকে দুইদিন বয়সের এক নবজাতকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় শার্শা থানায় একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ। পরে ওই থানার পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। কিন্তু নবজাতকের পরিচয় বা কারা হত্যা করেছে. কে মরদেহ ফেলে গেছে এর কোন কুলকিনারা করতে পারেনি। ফলে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। আদালত মামলাটির তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক পিবিআই’র পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন মামলাটির তত্ত্বাবধায়ন করেন এবং এসআই মিজানুর রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পান।
তদন্ত মোতাবেক পিবিআই উপজেলার হাজিরবাগ এলাকা থেকে আসামিদ্বয়কে গত রোববার রাতে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, আসামি মাসুরা বিধবা। তিনি দিন মজুর। বিভিন্ন ইট ভাটা ও রাস্তা মেরামতের কাজে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে থাকেন। বছর দুইয়েক আগে রাস্তার কাজের জন্য সিলেটে যান। সেখানে কাজ শেষে ১৫দিন পর ফিরে এসে শার্শার জেলেপাড়ার গ্রামের ইসমাইলের বাড়িতে ভাড়া হিসেবে বসবাস করতেন। তিনি সিলেটে কাজ করার সময় এক ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এতে তিনি অন্তঃসত্বা হয়ে পড়েন।
স্বামী মারা যাওয়ার পরও মাসুরার গর্ভবর্তী হওয়া নিয়ে ওই পাড়ার কানাঘুষা চলতে থাকে। সন্তানের পিতার পরিচয় অনেকে জানতে চায়। কিন্তু মাসুরা বলতে পারে না। ফলে তিনি ও তার মা কদভানু বাধ্য হয়ে একই উপজেলার পান্তাপাড়ার সিদ্দিকের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। ওই বাড়িতে আসার ৪দিন পর মাসুরা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। পরে কদভানু লোকলজ্জার ভয়ে একটি বালতির মধ্যে করে নবজাতকটিকে কাওসার আলীর পরিত্যাক্ত পুকুরে ফেলে দিয়ে আসেন।
পিবিআই জানিয়েছে, এই ঘটনাটি আসামিদ্বয় সোমবার যশোরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে স্বীকার করেছেন। আদালত তাদের জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছে। আসামিদ্বয়কে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Comments are closed.