April 27, 2024, 11:06 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সাইকেলযোগে ২৫০ কি. মি. পথ পাড়ি দিয়ে পদ্মা সেতু ভ্রমণ করলেন দুই কিশোর রিয়াদ হোসেন

সাইকেলযোগে ২৫০ কি. মি. পথ পাড়ি দিয়ে পদ্মা সেতু ভ্রমণ করলেন দুই কিশোর রিয়াদ হোসেন

নিজের ইচ্ছে শক্তি আর অদম্য মনোবলেই মানুষ সাধারণত অসাধ্যকে সাধন করার স্বপ্ন দেখে। আমরা প্রায়ই বলি, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। কথাটি প্রকৃত অর্থেই যথার্থ। কারন একজন মানুষ যদি স্বপ্নই দেখতে না জানে তাহলে তার বাস্তব রুপ দেওয়া শুধু কঠিন কাজই নয় বলা যায় অসম্ভবই। এই ইচ্ছে শক্তি আর স্বপ্নে অরুনিমা সিনহা নামে ভারতীয় এক প্রতিবন্ধী নকল পা দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। এই অদম্য মনোবল আর স্বপ্নই হয়তো থামাতে পারেনি স্টিফেন হকিং কিংবা হেলেন কালারের। পৃথিবীর বুকে এমন আত্মশক্তির ফলেই বহু মানুষ স্মরণীয় বরণীয় হয়ে রয়েছেন। তবে তাদের মতো এতো বড় কোন অসাধ্যকে সাধন করতে না পারলেও নিজেদের জায়গা থেকে তাদের সীমাহীন স্বপ্নকে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখেছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কলেজ পড়ুয়া দুই কিশোর। সাইকেলযোগে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এই দুই কিশোর ভ্রমণ করেছেন পাইকগাছা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত।

বলছিলাম পাইকগাছা উপজেলার বাঁকা গ্রামের নজরুল গাজীর ছেলে মোহাম্মদ মুবাশশির আজমল (১৭) ও পাশ্ববর্তী শ্রীকন্ঠপুর গ্রামের মো. আব্দুস ছাত্তার গাজীর ছেলে ফরহাদ মাজহারের (১৭) কথা। দুই বন্ধু একই সাথে লেখাপড়া করেছেন মাধ্যমিক পর্যন্ত। শহীদ কামরুল মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে একই সাথে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুবাশশির আজমল ভর্তি হন আর.কে.বি.কে হরিশ্চন্দ্র কলেজিয়েট ইনস্টিটিউশনে এবং ফরহাদ মাজহার ভর্তি হন দরগাহপুর কলেজিয়েট স্কুলে। তারা উভয় উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। একই সাথে কোচিং এবং ব্যাচ করার সুবাদে প্রতিদিনই দেখা হত তাদের। স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের মধ্যে এতো উৎসাহ উদ্দীপনা দেখেই তারা ঠিক করেন উদ্বোধনের আগেই তারা ঘুরতে যাবেন পদ্মা সেতুতে। প্রাথমিকভাবে তাদের সাথে অনেক বন্ধুরাই আগ্রহী হয়েছিলো। কিন্তু যখন তারা বাইসাইকেলযোগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তখন আর কেউই সাড়া দিলো না৷ বরং এতো পথ কিভাবে সাইকেলে যাবে, পথে কি হবে, কষ্ট হয়ে যাবে-এমন সব কথা বলে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করতে থাকে তাদের। তবে সবাই পিছটান দিলেও দৃঢ় সংকল্প আর ইচ্ছে শক্তির ফলে তারা দুই জন তাদের সিদ্ধান্তে অটুট থাকে। সব জল্পনা কল্পনার শেষে ১৮ জুন শনিবার সকাল ৫;৩০ মিনিটে দুই সাইকেল নিয়ে বের হয় মুবাশশির ও ফরহাদ। সাথে শুকনো কিছু খাবার, পানির বোতল, গামছা আর কিছু টাকা নিয়ে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে।

নিজ গ্রাম থেকে বেরিয়ে তালা, খুলনা, গোপালগঞ্জ হয়ে ভাঙা দিয়ে অবশেষে রাত ১১ টায় পৌঁছায় স্বপ্নের পদ্মাসেতুতে। সব পিছুটান পিছনে ফেলে পদ্মা সেতুর পিলারে হাত দিয়ে স্বপ্নকে বাস্তবে ছুঁয়ে দেখেছে তারা।
ভ্রমণকারী মুবাশশির আজমল বলেন, সাহস করে উদ্যোগ নিলেও অধিকাংশ বন্ধুরা যখন যেতে চাইনি তখন কিছুটা ভয় পেয়ে গেছিলাম। আসলেই আমরা পারবো কিনা। তারপরও সাহস নিয়ে দু’জন বেরিয়ে পড়ে সাধারণ দুটি সাইকেল নিয়ে। পথিমধ্যে কয়েক জায়গায় বিরতি নিয়ে হালকা নাস্তা করে নি৷ মধ্যে গতিতেই আমরা সাবধানতার সাথে সাইকেল চালাতে থাকি। কিছু সময় পরপর কষ্ট হলে নিজেরা নিজেদেরকে অনুপ্রেরণা দি আর রাস্তার ধার দিয়ে চালাতে থাকি। সবশেষ পদ্মা সেতু যখন নিজের স্বচক্ষে দেখতে পেরেছি সেই অনুভূতিটা ছিলো অসাধারণ এক ভালোলাগার মুহুর্ত। আল্লাহতালার অশেষ মেহেরবানিতে আমরা ভ্রমন করে আবার সাইকেল চালিয়ে ঠিকমতো বাড়ি ফিরেছি।

এসময় ফরহাদ মাজহার বলেন, সাধারণ দু’টি সাইকেল নিয়ে এতো পথ যেতে হবে প্রথমে একটু কেমন লাগলেও সাহস করে আমরা দু’জন বের হয়েছিলাম। কত মানুষ তো কত বড় কাজ করছে আমরা কেন পারবো না – এমন অনুপ্রেরণা নিয়েই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে যাত্রা শুরু করি। ওখানে গিয়ে পদ্মা সেতু দেখার পরে রাতের বেলায় আমরা জাজিরার মধ্যে নালাডোবা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে থাকি। পরদিন সকাল ৮ টার পরে আমরা আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওন দি। সবমিলে বেশ স্মরণীয় একটা ভ্রমণ হলো আমাদের দুই বন্ধুর।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com