April 27, 2024, 7:39 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সাতক্ষীরায় প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান সোসাইটির প্রাণনাথ দাস ভারতে গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরায় প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান সোসাইটির প্রাণনাথ দাস ভারতে গ্রেপ্তার

গ্রাহকদের শতকোটি টাকা প্রতারণা করে স্বপরিবারে পালিয়ে যাওয়া সাতক্ষীরার প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক প্রাণনাথ দাসকে অবশেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ (এসডিএফ) গ্রেপ্তার করেছে। রোববার রাতে তাকে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গোবরডাঙা থানাধীন জামদানি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পশ্চিম বাংলার কয়টি গণমাধ্যম সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করে।

গ্রেপ্তারকৃত প্রাণনাথ দাস (৪৬) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার টিকেট গ্রামের মৃত জুড়ন দাসের ছেলে ও বর্তমাসে পুরাতন সাতক্ষীরার বাসিন্দা। গোবরডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পিংকি রাণী ঘোষ জানান, অবৈধপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে অবস্থান করছেন এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ গোয়েন্দা পুলিশের (এসডিএফ) একটি দল গত রোববার রাতে প্রাণনাথ দাসকে জামদানি গ্রামের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে গোবরডাঙা থানায় সোপর্দ করা হয়।

এ ঘটনায় অবৈধপথে ভারতে আসার অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে প্রাণনাথের বিরুদ্ধে ফরেনার এক্ট ১৪(এ) ধারায় একটি মামলা (জিআর-৭৮/২৪) দায়ের করেন। ১৮ মার্চ তাকে বারাসাত সহকারি বিচারিক হাকিমের (এসিজেএম) আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে গোবরডাঙা থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রাণনাথ গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস সাতক্ষীরা সদরের গোয়ালপোতা গ্রামের ঠাকুরদাস মন্ডলের নামে থানায় একটি মিসিং জিডি করেন। তবে জিডিতে ইতি রানী বিশ্বাস কোন ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন তা জানার চেষ্টা চলছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রাণনাথ দাস ২০০২ সালে রুপালী লাইফ ইনসিওরেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা ও জেলার বাইরে বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বহু টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১২ সালে ১২১ নং সমবায় রেজিষ্ট্রেশন মূলে প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি খোলেন প্রাণনাথ দাশ। সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বড় ভাই বিশ্বনাথ দাশকে নিযুক্ত করে গত ১০ বছরে ডিপিএস ও ফিক্সড ডিপোজিট এর মাধ্যমে শত গ্রাহকদের কাছ থেকে শত কোটি টাকা প্রতারণা করেন।

প্রতারণার টাকা দিয়ে তিনি পুরাতন সাতক্ষীরায় বাড়িসহ গাভায় চার বিঘা জমি, সদুরডাঙিতে দুটি বাড়ি, বুধহাটায় দুটি অফিস, মুন্সিপাড়ায় চার শতক জমি ও পুরাতন সাতক্ষীরায় দুটি শোরুম খোলেন। জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে প্রাণনাথ সাতক্ষীরা মন্দির সমিতির সাংগঠণিক সম্পাদক, বাস মলিক সমিতির সাংগঠণিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সংগঠণের ভাল ভাল পদ অলঙ্কৃত করেন। করেন কুলিয়া ইউপি নির্বাচন।

একপর্যায়ে প্রাণনাথ টিকেট গ্রামে নিজের পৈতৃক ১১ বিঘা জমি, মুন্সিপাড়ার চার শতক জমি, গাভার জমিসহ সদুরডাঙার একটি বাড়ি, কুল্ল্যার দুটি অফিস বিক্রি করে দেন। বিক্রি করেন তার কয়েকটি বাস ও প্রাইভেটকার। সদুরডাঙির একটি বাড়ি ও পুরাতন সাতক্ষীরার বাড়ি প্রাইম ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে এক কোটি ১৩ লাখ টাকার ঋণ নেওয়ায় তা আর হস্তান্তর হয়নি। এসব জমি বিক্রি করার খবর পেয়ে গ্রাহকরা মুনাফা ও আসল টাকা ফেরৎ চাইলে প্রাননাথ টালবাহানা শুরু করেন।

এসব টাকা ফিরে পেতে তারা প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাদের শরনাপন্ন হয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভূধর সরকারসহ শতাধিক ব্যক্তি চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, র‌্যাব- ৬ ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।

অভিযোগপত্রে প্রাননাথ দাশ, তার ভাই বিশ্বনাথ দাশ ও স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস যাতে গ্রাহকদের বিপুল পরিমান টাকা বিদেশে পাঠিয়ে নিজেরা পালাতে না পারে সেজন্য তাদের পাসপোর্ট জব্দ করার আবেদন করা হয়। এরপরও কতিপয় গ্রাহক টাকা পাওয়ার দাবিতে গত ১৮ ডিসেম্বর প্রাণনাথের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়।

প্রাণনাথের স্বপরিবারে ভারতে চলে যাওয়ার খবরে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পক্ষ থেকে ২১ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়। বিকেল চারটায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক অরুন কুমার কর্মকার বাদি হয়ে প্রাণনাথ, স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস ও বড় ভাই বিশ্বনাথ দাশ এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com