April 27, 2024, 8:03 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সুন্দরবনে মাছ ধরছে জেলেরা: পর্যটক উন্মুক্ত

সুন্দরবনে মাছ ধরছে জেলেরা: পর্যটক উন্মুক্ত

সুন্দরবনের নদীতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এবার ১ মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ধরা ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়। টানা তিন মাস পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ফলে উপকূল সংলগ্ন এলাকায় বন বিভাগ থেকে বাসপারমেট নিয়ে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলে-বাওয়ালি বনজীবী ও পর্যটন নির্ভর মানুষেরা। আগে থেকে নৌকা সংস্কার ও মাছ ধরার সুতো বর্শি,জাল মেরামত করার কাজে ব্যস্ত পার করে স্বস্তির নি:শ্বাস নিয়ে বিভিন্ন দোকানপাট হতে বাজার সদাই করে ঈদ আনন্দের মতো অনুভব করছে জেলে পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা যায়, সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের খোলপেটুয়া নদীর ধারে নৌকা ধুয়ে মুছে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, মেরামত ও রং করে অনেকের সুন্দর বনে গিয়েছে জেলে পরিবারের সদস্যরা। সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী, রমজাননগর, মুন্সিগঞ্জ, আটুলিয়া, বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের খোলপেটুয়া নদীর পাশ দিয়ে। তিন মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবনের নদ-নদীতে বুধবার হতে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি পেলেন জেলেরা, ফলে সুন্দরবন উপকূলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জেলেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। সেখানেই একই দৃশ্য। সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা যায় উপজেলার গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কৈখালী ও রমজাননগর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চুনকুড়ি, মালঞ্চ ও খোলপেটুয়া নদীর ধারে সবাই নৌকা মেরামত ও রং করে সুন্দরবনে গিয়েছে এর মধ্যেও তাঁদের মুখে হাসির ঝিলিক। মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলোর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলায় চারদিকে উৎসবের আমেজ। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদ-নদী থেকে সব ধরনের মাছ ও কাঁকড়া ধরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, এরআগে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রজনন মৌসুম হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছিল কাঁকড়া ধরা, ফলে সুন্দরবনের মাছ ও কাঁকড়া ধরার ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায় সমস্যায় ছিল, সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রায় ১৫ হাজার জেলে পরিবার নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।

বন বিভাগের পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরার রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী ও কোবাদক স্টেশন মিলে ২ হাজার ৯০০ নৌকার বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। আজ পর্যন্ত অল্প কিছু বিএলসি সরকারি বিধিমালা অমান্য ও বিভিন্ন অনিয়মের জন্য অল্প কয়েকটি বিএলসি নবায়ন বাদে প্রায় সব বিএলসি নবায়ন করা হয়ে গেছে, মনের আনন্দে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মেনে জেলেরা নৌকার বিএলসির নবায়ন করে গত বুধবার সকাল হতে বনে প্রবেশ করছে কয়েকশ জেলে। কৈখালী মাদার নদীর ধারে নৌকা রং করতে দেখা গেল কয়েজনক জেলেকে। কালিন্চি গ্রামের সামছুর জানান, তিন মাস নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ, কাঁকড়া ধরা বন্ধ থাকায় সুন্দরবনঘেঁষা গ্রামগুলোর মানুষ বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিল। অনেকে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। সময় পার করছে খেয়ে না খেয়ে। এ অবস্থায় বুধবার থেকে সুন্দরবনের নদ-নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি দেওয়ার খবরে সবাই খুশি। তারা মনে করছে তাদের দুর্দিন কাটবে এবার। দক্ষিণ কৈখালী কালিন্দী নদীর তীরে দেখা গেল কয়েকজন জেলে নৌকা পরিষ্কার করে লোকালয় হতে গভীর সুন্দরবন মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সব জেলেদের বাওয়ালীদের মধ্যে একটা মহা উৎসবের আমেজ যেনো ফুটে উঠেছে। সেখানে কামাল গাজী বলেন, গত আট মাসের মধ্যে পাঁচ মাস সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরা বন্ধ রেখেছিলো বন বিভাগ, তাঁরা দীর্ঘ সময় বেকার থাকায় কষ্টে রয়েছেন। মহাজনের কাছ থেকে আগাম ঋণ নিয়েছেন। এবার দুঃখের অবসান হওয়ার আশা করছেন তিনি। বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম জানান, বুধবার থেকে আবার মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অচিরেই তাদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জেলেদের সমস্যা দূর হয়ে তাদের ঈদ আনন্দের মতো খুশিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এবার সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে এক হাজার নৌকায় পাঁচ হাজার জেলে সুন্দরবনে প্রবেশ করবেন বলে তিনি ধারণা করছেন। কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. হারুন-র রশীদ বেপারী জানান আমাদের কৈখালী স্টেশনের এরিয়ায় ৪২৯ টি বিএলসি ছিল, কিন্তু এবার ৪২৯ টি বিএলসি থেকে ৪০৪টি বিএলসি নবায়ন করা হয়েছে, বাকি অল্প কয়েকটি বিএলসি নবায়ন করা যায় নি বিভিন্ন অনিয়ম সহ আদলতে মামলা থাকায় বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সুন্দরবন সাতক্ষীরা উপকূলে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বনজীবী ও পর্যটন নির্ভর মানুষরা। নৌকা-ট্রলার প্রস্তুত এবং গভীর সুন্দরবনে মাছ ধরার। অভাব অনটনে পড়ে থাকা বনজীবিরা কষ্ট ভুলে আবারও নতুন উদ্যমে ফিরছে সুন্দরবনে।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com