September 7, 2024, 12:24 pm
গীতিকবি-সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ। সঙ্গীতের একজন পারফেক্ট প্রিন্স। তার সঙ্গীতের শুরু ছেলেবেলা থেকেই। অনেকটা আড়ালে, অগোচরে পরিবারের ইচ্ছার বাইরে গিয়েই তার গান শেখা এবং গান করা শুরু করেন তিনি। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ব্যান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েন। শুরুতে একটি ব্যান্ড দলের ভোকালিস্ট ছিলেন। তারপর কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে শুরু করেন পুরোদমে কম্পোজিশন। পাশাপাশি তিনি গানও লেখা শুরু করেন। সঙ্গীতের ভূবনে প্রিন্সের পথ চলা শুরু হয় আশির দশকের একেবারে শেষ প্রান্তে ‘দ্যা ব্লজ’ ব্যান্ডের ভোকাল ও গিটারিস্ট হিসেবে।
এরপর ৯০ দশকের শুরুতে প্রিন্স গঠন করেন ‘ফ্রম ওয়েস্ট’ নামক একটি ব্যান্ড। যেখানে ব্যান্ড লিডার এবং মূল ভোকাল ছিলেন তিনিই। সেই ব্যান্ডের আলোচিত একটি গান ছিল রাজাকার আলবদর কিছুই রইবো নারে/উপরে দালাল ভিতরে চোর কিছুই হইবো নারে/সব রাজাকার ভাইসা যাইবো বঙ্গোপসাগরে গানটি। ফ্রম ওয়েষ্ট এর প্রকাশিত প্রথম অ্যালবামের নাম ছিল ‘সে কেমন মেয়ে’। এমন অগণিত অ্যালবামের মাধ্যমে শ্রোতা হৃদয়ে একজন গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে স্থায়ী ভালোবাসার জায়গা করে নেন প্রিন্স মাহমুদ।
আজ ১৭ জুলাই প্রিন্স মাহমুদের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। তার জন্ম খুলনায়। ছোটবেলা থেকেই গানের চর্চা শুরু করেন। গান কম্পোজিশন ও লেখা দুটোই সমানতালে চালিয়ে যান। প্রিন্স মাহমুদ ব্যান্ড মিক্সড অ্যালবামের কাজও করেছেন। দেশের জনপ্রিয় সব ব্যান্ড তারকাদের নিয়ে তিনি মিক্সড অ্যালোবাম করতেন। আর সেসব অ্যালবাম ছুঁয়ে ফেলতো সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়া।
এক জীবনে প্রিন্স মাহমুদ এত জনপ্রিয় আর কালজয়ী গান সৃষ্টি করেছেন যে, এটা খুব কম সঙ্গীতজ্ঞ পারেন। বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তিদের একক কণ্ঠে জনপ্রিয় হওয়া সিংহভাগ গানই তার সৃষ্টি করা। জেমসের কণ্ঠে ‘মা’, ‘বাবা’, ‘বাংলাদেশ’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’ কিংবা হাসানের ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’, ‘এতদিন পরে প্রশ্ন জাগে’, আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে ‘বেলাশেষে ফিরে এসে’ গানগুলো প্রিন্স মাহমুদেরই সৃষ্ট।
এছাড়াও ‘সে যে এখন আমায় ভালোবাসে না’, ‘মাটি হবো মাটি’, ‘দুনিয়া তোর সঙ্গেতে নাই’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’, ‘সোনার মেয়ে’, ‘ছিপ নৌকো’, ‘ভুবন ডাঙার হাসি’সহ অসংখ্য কালজয়ী গান রয়েছে এই কিংবদন্তির লেখা-সুরে। দেশের সঙ্গীতে প্রিন্স মাহমুদের অবদান অসামান্য। কিন্তু তার প্রাপ্তির খাতা প্রায় শূন্য! কোনো এক অজানা কারণে তিনি বরাবরই পুরস্কার-সম্মাননা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু সেটা নিয়ে তার আক্ষেপ নেই। দেশের অগণিত শ্রোতার কাছে তিনি যেই ভালোবাসা পেয়েছেন, সেটাই সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে করেন তিনি। আর তাছাড়া প্রিন্স মাহমুদ এমন একটি সমৃদ্ধ অধ্যায়, যেখানে পুরস্কার একেবারে নস্যি!
Comments are closed.