April 27, 2024, 1:57 am

সাংবাদিক আবশ্যক
সাতক্ষীরা প্রবাহে সংবাদ পাঠানোর ইমেইল: arahmansat@gmail.com
শিরোনাম:
জুম্মার নামাজে মুসল্লিদের দোয়া চাইলেন মশিউর রহমান বাবু সাতক্ষীরায় অপহৃত ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে উদ্ধার করলো পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে পৃথক বার্ন ইউনিট না থাকায় জরুরী সেবা ঝুঁকিতে এসিড দগ্ধ ও পোড়া রুগীরা দাবদাহ উপেক্ষা করে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত জনপ্রিয়তার শীর্ষে নতুন মুখ প্রভাষক সুশান্ত কুমার মন্ডল আশাশুনীতে বাপ্পী সীড হাউজ দোকান উদ্বোধন দক্ষিণ খুলনার অস্ত্র ও মাদকের গডফাদার ওজিয়ার গ্রেফতার সাতক্ষীরায় টিটিসিতে ৭৫ দিন মেয়াদী দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মতবিনিময় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
শিক্ষক শূন্য খোলপেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় বাংলা দেখে পড়তে পারে না শিক্ষার্থীরা

শিক্ষক শূন্য খোলপেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় বাংলা দেখে পড়তে পারে না শিক্ষার্থীরা

ভেঙে পড়েছে শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ১২২নং খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষক সংকটসহ প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের চরম উদাসীনতা বিদ্যালয়টির বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। খোলপেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্য, দিন চুক্তি শিক্ষকের মাধ্যমে চলছে স্কুল কার্যক্রম। সরেজমিনে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ রবিবার সকাল ১০টা গাবুরা খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখাগেছে যে, বারান্দায় ছাত্র ছাত্রীরা ছোটাছুটি করছে।

তিনটি শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করছেন দুই জন দিন চুক্তি শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক। হাজিরা খাতা অনুযায়ী ৫ম শ্রেণিতে ৬০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলেও ১৪ জন উপস্থিত, ৪র্থ শ্রেণিতে ৬৮ জনের যায়গায় ১৯ জন এবং ৩য় শ্রেণিতে ৮০ জনের যায়গায় ২৭ জন উপস্থিত ছিল। অফিস কক্ষে দেখা যায়, টেবিল চেয়ারে ধুলার আস্তরণ, মাকড়সা জাল, দেখলে মনে হবে ভুতুড়ে কোন কক্ষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক শ্যামনগরে থাকেন। মাসে এক-দুইদিন স্কুলে আসেন। বাকি সময় অফিসে কাজ আছে বলে চলে যান। তার টানা ১৮ বছর বিদ্যালয়টিতে কর্মরত অবস্থা এরকম ভাবে স্কলের কার্যক্রম চালান। বিদ্যালয়টিতে খাতা কলমে চারজন শিক্ষক থাকলেও সহকারী শিক্ষক মিরা বালা প্রশিক্ষণে রয়েছেন। ফরহাদ হোসেন সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছেন। প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন থাকেন শ্যামনগরে। আর অপর সহকারী শিক্ষক বুদ্ধদেব জোয়ার্দার বিদ্যালয়ে আসেন অনিয়মিত। মূলত স্থানীয় বাবু খান, শাহাদাত হোসেন ও কুমকুম আক্তার নামে তিন কলেজ শিক্ষার্থীকে দিন চুক্তিতে শিক্ষক বানিয়ে ৪৩৩ জন ছাত্র-ছাত্রীর পাঠদান করেন। সহকারী শিক্ষক বুদ্ধদেব জোয়ার্দার প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যথাসময়ে উপস্থিত থাকেন বলে দাবি করলেও হাজিরা খাতা দেখাতে বললে সাদাসিধা ভাষায় জানান, হাজিরা খাতা আলমারিতে। আর চাবি হেড স্যারের কাছে, স্যার যখন আসে তখন স্বাক্ষর করে নেন।

এসময় প্রধান শিক্ষক শেষ কবে বিদ্যালয়ে এসেছেন প্রশ্ন করলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রাক্তন সভাপতি হাফেজ মাহমুদুল হাসান জানান, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা থেকে শুরু করে, জমিদান, ম্যানেজিং কমিটিসহ সকল প্রকার কার্যক্রমে আমি ছিলাম, কিন্তু বিগত কয়েকবছর যাবৎ বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে হতাশ হচ্ছি। বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোন ম্যানেজিং কমিটি নেই, শিক্ষকও নেই। বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখার সময় শিক্ষার্থীদের সাথে গল্পের ছলে আড্ডা দেওয়ার সময়, সর্বোচ্চ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরাও বাংলা দেখে পড়তে পারে না, এমনকি নিজেদের নাম পর্যন্ত লিখতে পারে না। এসময় শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, হেড স্যার শ্যামনগরে থাকেন। ফাঁকে ফাঁকে আসেন, আবার চলে যান। আমরা স্কুলে এসে খেলাধুলা করি যে স্যারেরা আছেন তারা কিছু বলে না। অভিভাবক আবুল কালাম ও মরিয়ম বেগম জানান, স্কুলে বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটি নেই। শিক্ষক সংকট রয়েছে। অভিভাবকদের সাথে শিক্ষকদের কোন সম্পর্ক নেই।

হেড স্যার আসেন না। থাকেন শ্যামনগরে। তিন জন প্যারা শিক্ষক দিয়ে নিজের কাজ সারেন। গাবুরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার খান হাবিবুল্লাহ বাহার বলেন, এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে দেলোয়ার হোসেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তার খামখেয়ালীপনায় বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এখনো ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে কয়েকবার বসাবসী হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয়নি। তিনি নিজে স্কুল করেন না। আর বিদ্যালয়ে শিক্ষক রাখার বদলে নিজের স্বার্থের জন্য শিক্ষকদের বদলিতে সুপারিশ করেন। প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মোবাইলে বলেন, স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা কম। আমি বার বার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে বলার পরও তারা শিক্ষক দিচ্ছেন না। আমি একা আর কত দেখবো। আমি নিয়মিত স্কুলে যায়। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছুটিতে ছিলাম। কিন্তু গত রবিবার, সোমবার স্কুলে না আসার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, খেয়া পার হতে পারেনি। শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিজ মিঞা বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজে স্কুল না করে বেতনের টাকায় তিনজন প্যারা শিক্ষক দিয়ে স্কুল চালানোর বিষয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্যারা শিক্ষকদের টাকা দিয়ে রাখা যাবে না।


Comments are closed.

ইমেইল: arahmansat@gmail.com
Design & Developed BY CodesHost Limited
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com